কাঁথি : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় উঠে এসেছিল, ‘মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান।’ তবে বর্তমান ভোট রাজনীতিতে চলে এসেছে ধর্মের ছায়া। কমবেশি সকল রাজনৈতিক দলই ধর্মকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। যার ফলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে রাজ্য রাজনীতির পরিস্থিতি। ধর্মে ধর্মে ভেদাভেদ ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছে।
এমন পরিস্থিতিতে এবার হিন্দু বৃদ্ধের সৎকারে এগিয়ে এসে নজির গড়লেন কাঁথির মুসলিম যুবকরা। ধর্মের বেড়াজাল পেরিয়ে অসহায় বৃদ্ধের সৎকার করলেন কাঁথির তহেরান হোসেন, আশরাফ আলি, শেখ রবিউল, শেখ আজিজুল ও মানিক মাইতিরা।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ধর্মীয় ভেদাভেদ বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক কর্তব্য পালনেও ধর্মের লড়াই বিভিন্ন জায়গায়। কিন্তু সেই লড়াইকে পরাজিত করে বৃদ্ধের সৎকার করে নজির গড়লেন কাঁথির মুসলিম যুবকরা।
জানা গিয়েছে, দিঘা মোহনা কোস্টাল থানা এলাকার এক অসহায় বৃদ্ধ প্রশান্ত সামন্ত গত বেশ কয়েকদিন ধরে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত বুধবার দুপুরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং কিছুক্ষণ পরেই তার মৃত্যু হয়। প্রশান্তবাবুর পরিবারের লোকজন বলতে তেমন কেউই নেই। তার একমাত্র পুত্র সন্তানেরও বেশ কয়েক বছর আগে মৃত্যু হয়েছে। স্ত্রী সৌমিলি সামন্ত থাকলেও তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ। তার ওপর স্বামীর মৃত্যুর কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন প্রশান্তবাবুর স্ত্রীও। হাতে আর্থিক বলও সেভাবে নেই। ফলে স্বামীর মৃতদেহ আগলে হাসপাতাল চত্বরেই বসে ছিলেন সৌমিলিদেবী।
খবর ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় এলাকায়। ঘটনাচক্রে এই খবর কানে পৌঁছায় স্থানীয় মুসলিম যুবক তেহরান হোসেনের। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসে হাসপাতাল চত্বরে। ডেকে নেন বাকি বন্ধু আশরাফ আলি, শেখ রবিউল, শেখ আজিজুল ও মানিক মাইতিদের। মানিক একমাত্র হিন্দু ধর্মালম্বী হলেও বাকি সকলে মুসলিম ধর্মের। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কেউই পিছপা হননি। ব্যবস্থা করেন বৃদ্ধের সৎকারের। সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিন ভ্যান ভাড়ায় করে খড়্গচন্ডী শ্মশানে দেহ নিয়ে পৌঁছায় তারা। সন্ধ্যার মধ্যেই সৎকার সম্পন্ন হয়।
প্রশান্তবাবুর স্ত্রী সৌমিলি দেবীকে সান্তনা দেওয়ার পাশাপাশি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। সৌমিলিদেবী জানান, “এই ধরনের উপকারের কথা সারাজীবন মনে থাকবে।” তেহরান, আশরাফ, রবিউল, আজিজুল, মানিকরা বলেন, “ধর্ম- ধর্ম এই খেলা আমরা খেলি না। মানুষের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোয় আমাদের কর্তব্য বলে আমরা মনে করি।”
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.