দেবময় ঘোষ, কলকাতা: বাতিল হওয়ার ইতিবৃত্ত দীর্ঘই হল৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিন সফর এর আগেও বাতিল হয়েছে৷ এর আগেও চিনের বানিজ্য দলের সঙ্গে কলকাতায় বৈঠক বাতিল হয়েছে রাজ্যের শিল্প-বানিজ্য মন্ত্রি অমিত মিত্রর৷ মুখ্যমন্ত্রীর আট দিনের চিন সফর বাতিল হওয়ার তালিকায় এটি একটি নতুন সংযোজন মাত্র৷
কিন্তু রাজ্যে চিনের বানিজ্য কখনোই থেমে থাকেনি৷ ২০১৭ এবং ২০১৮ সালের বিশ্ব বঙ্গ বানিজ্য সম্মেলন বা বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে চিনের বিশাল দল অংশগ্রহণ করেছে৷ জিয়াংসু এবং সানজি প্রভিন্স থেকে ব্যবয়ায়ী সম্প্রদায় সম্মালনে অংশ গ্রহণ করে ব্যবসার ব্যাপারে আলোচনা করেছে৷ কলকাতায় চিনের কনসাল জেনারেল সেই সময় জানিয়েছিলেন, বিশ্ব বঙ্গ বানিজ্য সম্মালনে ৩০টি চিনা সংস্থা যোগদান করবে৷ ভারতের সঙ্গে, বিশেষ করে কলকাতার সঙ্গে বানিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে চায় চিন৷ রাজ্য সরকারের শিল্প দপ্তরের একটি সূত্রের খবর, ২০১৭ সালে অমিত মিত্রর সঙ্গে চিনা বানিজ্যদলের বৈঠককে সবুজ সঙ্কেত দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার৷ অসন্তুষ্ট বিদেশমন্ত্রক জানায় রাজ্য তাদের ওই বৈঠক সম্পর্কে কোনও আগাম তথ্য দেয়নি৷ মন্ত্রকের আপত্তিতেই ভেস্তে যায় বৈঠক৷
In response, on April 2, 2018, I appreciated her recommendation for me to lead the delegation to China under the Exchange Programme.
I mentioned to her that “since the interest of my country is involved, I wish to visit China sometime during last week of June, 2018”.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) June 22, 2018
তবে চিন সফরের আমন্ত্রণ এর আগেও পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ২০১৭ -তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিনের কুনমিং যাওয়ার আমন্ত্রণ জানায় চিনের কমিউনিস্ট সরকার। প্রথমে কেন্দ্রের তরফে সেই সফরকে অনুমোদন দেওয়া হলেও পরে তা ফিরিয়ে নেওয়া হয়৷ সেই সময় নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করেছিল রাজ্য সরকারও৷ মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল, বাকি সব রাজ্য, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাটের মন্ত্রী বা অফিসাররা চিন সফর করেছেন, কিন্তু বাংলাকে কেন বারবার আটকে দেওয়া হয়?
Thereafter, in pursuance of the letters from Chief Secretary and the Ambassador of India in China, a programme was chalked out, based on which we planned our visit in the coming week.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) June 22, 2018
তবে শুক্রবারের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন৷ এক্ষেত্রে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবিত বৈঠকের চূড়ান্ত সংকেত এসে পৌছায়নি নবান্নে৷ ভারত সরকারের দূত হয়ে মমতা পৌঁছে যেতেন চিনে৷ কিন্তু যে ‘এক্সচেঞ্জ পোগ্রাম’-এর অধীনে তিনি মমতা চিনে যেতেন , তার আওতায় থাকা রাজনৈতিক বৈঠক নিয়ে কিছুই জানায়নি চিনা সরকার৷ তাই বাতিল হয়েছে মমতার সফর৷ কথা ছিল চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে তাত্ত্বিক এবং আদর্শগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন মমতা৷ চিনা ব্যাংকগুলির সঙ্গে কথা বলবেন অমিত মিত্র৷ কিছুই হল না৷
Till yesterday, everything was going on well, but unfortunately, the Chinese side could not confirm the political meetings at appropriate level as informed by our Ambassador in China.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) June 22, 2018
It has now been intimated by our Ambassador in China that the political meetings at the appropriate level under the Exchange Programme could not be confirmed. Therefore, the purpose of my visit with a delegation to China under the Exchange Programme is of no use.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) June 22, 2018
ডোকলাম পরবর্তী সময়ে, চিন সংক্রাম্ত যেকোন ব্যাপারেই নজরদারি বাড়িয়েছে ভারত সরকার৷ এরই মধ্যেই চিনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ বা ওবরের মানচিত্রে কলকাতাকে দেখা যায়৷ ওই মানচিত্র নিয়ে জলঘোলাও কম হয়নি৷ কারণ চিনের ওবর প্রজেক্টের ঘোর বিরোধী ভারত৷ ওবর প্রজেক্টেরই একটি অংশের নাম ‘চায়না পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর’ বা সিপেক৷ ওই করিডর আবার পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে৷ ভারতের আপত্তি, চিন কীভাবে ওই অংশে রাস্তা তৈরি করতে পারে? কারণ কাশ্মীরের সম্পূর্ণ অংশটিই ভারতের অবিচ্ছেদ্দ অঙ্গ৷
Although our Ambassador in China had tried his best to make the programme a success, non-confirmation of the political meetings at the appropriate level as proposed by the Indian Ambassador to China, at the last moment, has unfortunately compelled us to cancel the visit.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) June 22, 2018
However, I wish the continuation of the friendship of India and China in the days to come and it should strengthen further in the interest of both the countries.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) June 22, 2018
বাংলা থেকে অনেক কিছুই নিজের দেশের জন্য নেয় চিন৷ দার্জিলিং চা, পাট, হস্তশিল্প, সি-ফুড অন্যতম৷ এ যাত্রায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে সফর না হলেও রাজ্যের সঙ্গে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক চিন৷ কলকাতায় চিনা কলসুলেটের প্রেস বার্তায় বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরসূচির জন্য তৈরি হওয়া কষ্টকর ছিল৷ ওই সফরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও করা যায়নি৷
আরও পড়ুন: বাংলা ঘুষের রাজত্বে পরিণত হয়েছে, তোপ রাহুল সিনহার
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.