সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় : বিজেপিকে হারাতে আগে তৃণমূলকে সরাতে হবে এই ভাবনায় বিশ্বাসী নয় বাম লিবারেশন। তাঁরা মোর্চার জোটে নেই, তাদের পক্ষে সুর চড়িয়েছেন সম্মাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। কিন্তু কেন বিজেপিকে হারাতে আগে তৃণমূলকে সরাতে হবে তত্বে বিশ্বাসী নন তিনি। এর কারণ তিনি ব্যখ্যা করেছেন সোশ্যাল মাধ্যমে।
দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেছেন , ‘পশ্চিমবঙ্গে আজ আমরা বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটে নেই কেন? আমরা মনে করি এ রাজ্যে আজ মূল চ্যালেঞ্জ বিজেপিকে সরাসরি ক্ষমতায় আসতে না দেওয়া। সেজন্য অবশ্যই বামপন্থী আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে হবে, নির্বাচনেও সাফল্য বাড়াতে হবে। কিন্তু বিজেপিকে হারাতে আগে তৃণমূলকে সরাতে হবে এমন স্টেজ থিওরী আমরা সঠিক মনে করি না। তৃণমূলকে এই মুহূর্তে একটি বিজেপি বিরোধী দল হিসেবে না দেখে বিজেপির সমতুল্য ও সমার্থক শক্তি হিসেবে দেখাটা আমরা অবাস্তব মনে করি। ক্ষমতায় না থাকলে তৃণমূল দলের কী হবে, এই ভবিষ্যত জল্পনা-কল্পনার উপর দাঁড়িয়ে বর্তমানের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করাটা আমরা ভুল মনে করি।’
দীপঙ্করবাবুর কথায় , ‘তৃণমূলের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের অবশ্যই বিরোধিতা করতে হবে এবং আমরা তা করি। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের সন্ত্রাস অবশ্যই বিজেপিকে এ রাজ্যে জায়গা বাড়াতে সুবিধে করে দিয়েছে, কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ১৮টি আসন ও ৪০ শতাংশ ভোটের বিপরীতে তৃণমূলের দখলে থাকা ২২টি আসন ও ৪৩ শতাংশ ভোটকে বিজেপির সাথে একাকার করে দিয়ে বিজেমূল আখ্যা দিতে আমরা রাজি নই। বরং তাঁর ব্যখ্যা, ‘দুঃখজনক হলেও এ রাজ্যের নির্মম রাজনৈতিক সত্য হলো বামপন্থীদের ভোট বিরাটভাবে কমেছে এবং তার বড় অংশ গিয়েছে বিজেপিতে। আরও বেশি বেশি তৃণমূল বিরোধিতা বা তৃণমূল বিজেপি মিলিয়ে দিয়ে বিজেমূল বিরোধিতার মাধ্যমে সেই ভোটকে বাম শিবিরে ফেরানো যাবে বলে আমাদের মনে হয় না। সেই মোহাচ্ছন্ন জনগণকে বিজেপির মোহ ও প্রভাব থেকে মুক্ত করাটাই আজ মূল চ্যালেঞ্জ। ‘
তিনি এও বলেছেন , ‘বিজেপির ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণের বিপরীতে একটি বিরোধী দল পরিচালিত সরকার ও রাজনীতিকে বিজেপির সাথে মিলিয়ে দেখাটা কোন বাস্তববাদী বিশ্লেষণ হতে পারে না। ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্ব বা কনস্পিরেসি থিওরী দিয়ে বাস্তব অবস্থাকে অস্বীকার করে বামপন্থী রাজনীতি এগোতে পারে বলে আমরা মনে করি না।’
দীপঙ্কর ভট্টাচার্য আরও বলেছেন, ‘খেয়াল করে দেখবেন কংগ্রেস ছাড়া দেশের কোন বিরোধী দলই পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সিপিএম-এর বিশ্লেষণের সঙ্গে একমত নয়। রাজ্যের ভেতরেও পুরনো বাম ফ্রন্টের বাইরে অন্য কোন বামপন্থী দলও এই বিশ্লেষণকে সঠিক মনে করেনা। এই মতপার্থক্যকে সম্মানের সঙ্গে মতপার্থক্য হিসেবেই গ্রহণ করা উচিত। এই মতপার্থক্য যথেষ্ট সিরিয়াস বলে আমরা জোটের ভেতরে থেকে ঐক্য ও সংগ্রামের নীতির কথা ভাবিনি।’
তিনি বলেছেন , ‘আমরা বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য জোরালো প্রচার চালাচ্ছি গোটা বাংলা জুড়ে। আমরা আশা করি এর সম্মিলিত প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের মধ্যে ফ্যাসিবাদ সংক্রান্ত বিপদবোধ ও ফ্যাসিবাদকে প্রতিরোধ করার তাগিদ ও চেতনা শক্তিশালী হয়ে উঠবে।’
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.